যখন শিকারি ছিলাম

বাংলা সাহিত্যে সবথেকে ক্ষীণ যে ধারাটি, সে হলো তার ‘শিকার কাহিনী’। কেনেথ এন্ডারসন, জিম করবেটসহ দু’চারজন আঙুলে-গোনা বিদেশীর ভারতীয় অরণ্যে রোমাঞ্চকর, গা-শিউরানো শিকার-কাহিনী বাদ দিলে বাঙালির এ জাতীয় অভিযান-কথা, বিশেষত গ্রন্থাকারে, বলতে গেলে ধর্তব্যেরই বাইরে। অথচ ‘ঘরের কাছে আরশী নগর’-এর মতো বাংলাদেশের সুন্দরবন, তার রয়েল বেঙ্গল টাইগার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহের বিস্তৃত ভূভাগ জুড়ে পাহাড়, গভীর অরণ্য আর অগণ্য পশুর কথা ভুবন
বিখ্যাত। এনায়েত মওলা, সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, যিনি ইতিমধ্যে সুপরিচিত ‘চট্টগ্রামের কাকলী: মুক্তিযুদ্ধের ভিন্ন ছবি’র রচয়িতা হিসেবে, ‘যখন শিকারি ছিলাম’ গ্রন্থের ভেতর দিয়ে নিজের নতুনতর পরিচয় তুলে ধরলেন। এই গ্রন্থভুক্ত প্রতিটি রচনা যেমন এ্যাডভেঞ্চারসুলভ রোমাঞ্চে ভরপুর, তেমনি পশুদের প্রতি নিছক খেয়ালি হিংস্রতা নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আশ্চর্য মমত্ববোধ ও মানবিকতা প্রদর্শন-দৃষ্টান্তেও প্রোজ্জ্বল। তাই এই গ্রন্থ হয়ে উঠেছে সাহিত্যের মাপদণ্ডে যেমন অমূল্য, তেমনি সকল বয়েসী পাঠকের জন্য তৃপ্তদায়ী খোরাক বিশেষ।